জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৮

কোটা সংস্কার আন্দোলন হোক দলীয় চেতনার উর্ধ্বে

কোটা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আশ্বাস্ত হয়েছিলাম কিন্তু এখন কোটা নিয়ে দলীয় চেতনা আবারও শক্ত প্রতিপক্ষ হওয়ার চেষ্টা করছে। কেননা বিভিন্ন মিডিয়া এখন আন্দোলনকারীদের জামাত শিবির কিংবা রাজাকার প্রমাণে ব্যস্ত। তাহলে কি দাঁড়ালো? মতিয়া চৌধুরির বক্তব্য প্রমাণই ঠিক। আমরা সবাই জানি মতিয়া চৌধুরির ভাষ্য মতে, এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী লাখ লাখ ছাত্রের বাবা রাজাকার ছিল? আচ্ছা অনেক শিক্ষার্থীর বাবা তো মুক্তিযুদ্ধের পরেও জন্ম গ্রহণ করেছে কিংবা অনেকের বাবা যুদ্ধের সময় সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও মুক্তিযোদ্ধাদের নানাবিধ সাহায্য করেছ্‌ (সেটা মৌন, জলপানীয়, কিংবা মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ বাড়িতে একবেলা বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ করে দিয়ে) অথবা অনেকেই আছেন যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সার্টিফিক নেয় নি তাহলে এরা সবাই কি এখন দলীয় চেতনায় রাজাকারের কোটা হয়ে যাবে? জানি না এই দেশের ছাত্র সমাজ কবে মুক্তি পাবে এই সব দলীয় চেতনার কোটা থেকে। এই ছাত্র সমাজ চাই স্বাধীনতার চেতনা, যেটা সৃষ্টি করে দিয়ে গিয়েছিল জাতিক জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কিন্তু আজ সেখানে দলীয় চেতনার ভাবাদর্শে আবৃত শাসক ছায়া গুলো গলা টিপে হত্যা করতে চাই এই দেশের ছাত্র সমাজকে। ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য করলে দেখবো স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা পরবর্তী যত গুলো ছাত্র আন্দোলন এদেশে সংঘটিত হয়েছে তার কোনটাতেই দলীয় চেতনা স্থান পায় নি। সর্বদা জাতীয় সমস্যা নিয়ে দলমত নির্বিশেষে এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে আপামত ছাত্র সমাজ। সর্বশেষ ২০০৮ সালের ছাত্র সমাজের আন্দোলনের দিকে লক্ষ্য করলেই সেটা সুস্পষ্ট। কেননা এই আন্দোলনে কোন দলীয় স্বার্থ ছিল না, ছিল না কোন নিজ স্বার্থ...ছিল কেবল স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠীর হাত থেকে মুক্তির উপায়।কিন্তু আজ আপামর ছাত্র সমাজের গণদাবী নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে তাদেরে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় সে রাজাকার কিংবা তার চৌদ্দ গোষ্ঠী রাজাকার। (ক্ষেত্র বিশেষে দেখা যায় মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকের বাবা জন্মগ্রহণই করে নি অথচ তাকেও রাজাকার বলে হেয় করার চেষ্টা চলছে)। আর সাথে পাল্লা দিয়ে চলে দালাল কিংবা চাটুকার মিডিয়ার রাজাকার প্রমাণের পৈশাচিক প্রচেষ্টা। এই সব দালাল কিংবা চাটুকার মিডিয়া এই গুলোর মাধ্যমে যে বর্তমান প্রজন্মকে হেয় করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সেটা বুঝতে গবেষণার প্রযোজন না হলেও অবুঝের মত চোখ বুঝে সেই খেলার রেফারি হয়ে খেলা চালিয়ে যাচ্ছে এই দেশের শাসক গোষ্ঠী। যেটা সত্যিই কাম্য নয়। ভোটের বাজারে তরুণ প্রজন্মের ন্যায্য দাবীকে বর্তমান শাসক গোষ্ঠী প্রাধান্য দিবে বলে এখনো প্রত্যাশা রাখি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধরে রাখতে কিংবা স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি রুখে দাঁড়াতে গেলেও এই তরুণ প্রজন্মকেই সবার আগে প্রয়োজন পড়বে এটা জাতিকে ভুলে গেলে চলবে না এবং সেই তরুণ প্রজন্ম যে সকল বাধা রুখে দিয়ে লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনতে জানে সেটা জাতি হিসেবে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না এবং এখনো আশ্বাস রাখি জননেত্রী ছাত্রদের গণদাবীকে অগ্রাহ্য করবেন না।

কোন মন্তব্য নেই: