জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৩

এনজিও কার্যক্রম ও সমাজ বাস্তবতা


আমাদের দেশে ব্র্যাক, আশাসহ নানা রকম এনজিও তাদের সামাজিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গ্রাম পর্যায়ে নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেসাধারণত এইগুলো এনজিও কর্তৃক অর্থের বিনিময়ে পরিচালিত হয়ে থাকে এবং দেশ বিদেশে এই গুলো যথেষ্ট সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে...এখানে প্রতিটি ছাত্রের জন্য নানা রকম সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়...এখন দেখা যায় অনেক বাবা তার সন্তানের মাধ্যমে এই সব সুযোগ সুবিধা ভোগের উদ্দেশ্যে এই সব স্কুলে পাঠায়...অতি সাম্প্রতিকের একটা বিষয় আমাকে এই সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা দিয়েছে...যেমন গত ঈদে আমার এলাকায় এই সব এনজিও কর্তৃক পরিচালিত স্কুল থেকে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা গম, আটা, চাউল, চিনি, তেল, লবনসহ যাবতীয় দ্রব সামগ্রী, এমন কি পরিধেয় পোশাকও আনছেযা হয়ত ঐ পরিবারটির জন্য সাময়িক ভালো...কিন্তু অবাক লাগে এই সব ছেলে মেয়ে সুশিক্ষা তো দূরে থাক মৌলিক শিক্ষাটাও ভালো ভাবে গ্রহণ করতে এই সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তেমন উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেয় না; ফলে এই সব ছেলে মেয়ে কোন দিন ক্লাস করে না কিন্তু ঐ দিন তাদেরকে পর্যাপ্ত সামগ্রী প্রদান করা হয়আরেক দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এই সন্তান গুলোর বাবারা এই সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকে এমন কি এই গুলো পাওয়ার আশায় তারা তাদের পূর্বের কাজটা পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়অন্যদিকে আমাদের এই সব এনজিও-র দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্র ভর্তি করে কিন্তু তাদের পড়াশুনা বিষয়ে কোন খোঁজ খবর রাখেনা...আমি অনেক চিন্তা করে দেখলাম এই ছাত্র ভর্তির সাথে তাদের স্বার্থের একটা বড় বিষয় জড়িতকেননা তারা যত ছাত্র দেখাতে পারবে তাদের অনুদানের পরিমাণটাও তত বাড়বে তাই তাদের এই আপ্রাণ প্রচেষ্টাআমাদের সচেতন মহল কিংবা সরকারি মহল কত বিষয় নিয়ে সরব কিন্তু এই বিষয়টি কোন ভাবে তাদের দৃষ্টিতে আসে নারাতের আধাঁরে আমাদের বুদ্ধিজীবী মহল কত রকম টকশো তে যেয়ে কত রকম বিষয় উপস্থাপন করেন যা সাধারণ জনগনের কাছে আজগুবি বৈকি তাছাড়া আর কিছুই নয়অনেকে শিক্ষা নিয়ে অনেক ধরনের কথা বলেছেন কিন্তু সেই কথার সাথে তাদের প্রকৃ্ত কার্যক্রমের পার্থক্য সুবিশালআর এই পার্থক্য দেখতে আমাদের মত মানুষ গুলোর কাছে এখন চশমা লাগে নাঅনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যারা এই সব টকশো-তে গিয়ে রাতের আধাঁরে গলা ফাটায় তাদেরই অনেকে এইসব এনজিও কর্তা...তখন আমার খুব হাসি পায়...কেননা আমাদের শিক্ষা নিয়ে কত বড় প্রতারণা হচ্ছে অথচ এই সকল সুধী সমাজ নামে তথাকথিত গোষ্ঠী কত রকম বুলি আওরিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরছেআমাদের সরকার এখন শিক্ষাটাকে প্রাধান্য দিলেও তাদের কাছে যেন এই বিষয় গুলো কোন মাথা ঘামানোর বিষয়ই নাকেন সরকার এত নির্ল্পিততা দেখায় এই প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রতারনার বিষয়টি জেনেও তার একটা প্রধান কারণ বলা যায় এই তথাকথিত বুদ্ধিজীবী শ্রেণী কম বেশি রাজনীতির মদদপুষ্টতাছাড়া এরা এই সব দল গুলোর বড় অংকের ডোনারওএখন আমার প্রশ্ন শিক্ষাটা কি তাহলে পণ্যে পরিনত হবে? আর যদি আপনারা শিক্ষাটাকে পণ্যে পরিণত করতে চান তাহলে আমার আবেদন থাকলো অন্তত পক্ষে আপনাদের (তথাকথিত বুদ্ধিজীবী এবং সরকারি মহল) স্বার্থে বেশি দাম পাওয়ার আশায় এটাকে দাঁড় করানকারণ এখান থেকেও অনেক অর্থ আসবে আপনাদের কাছেকেননা বর্তমান সমাজটাতে এখন না হোক কিছু দিন পরে হলেও Knowledge-টা বেচাকেনা শুরু হবেতখন আপনাদের চেয়ে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে নাতাই আসুন আপনাদের স্বার্থে হলেও শিক্ষাটাকে আপন সন্তানের জন্য গড়ে তুলিআর সরকারি মহল আপনারা শিক্ষিত জাতি আমাদেরকে দেওয়ার জন্য কত কিছুই না করছেন, এই জন্য সাধুবাদ আপনাদের প্রাপ্য কিন্তু আপনাদের উদাসীনতাকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণী যে শিক্ষাটাকে ব্যবসা বানিয়ে ফেলছে এদিকে কি একটু লক্ষ্য দিবেনআমাদের স্বার্থে নয় বরং আপনাদের স্বার্থে একটু লক্ষ্য দিলেই চলবে...কেননা দেশটা যখন পর্যাপ্ত শিক্ষিত মানুষের অভাব দেখা দিবে তখন অরাজকতাতে ভরে যাবেআর আমি হলফ করে বলতে পারি এর ফলে আপনাদের অস্থিত্বে বড় ধরনের সংকট দেখা দিবেতাই আসুন শিক্ষাটাকে পণ্যে পরিণত না করে আপনাদের (বুদ্ধিজীবী ও সরকারি মহল ) বাঁচার হাতিয়ার বানায়কেননা এর ব্যর্থতা মধ্যে আপনাদের পতন নিহিত

কোন মন্তব্য নেই: